Search This Blog

Friday, January 11, 2019

আমাদের গল্পসমগ্র

রাসেল ভাইয়া আমার সালাম নিবেন।
জানি
আপনি সব  সময়  ভালর দলে। আমি ভুত এফ এমের নিয়মিত সাপ্তাহিক শ্রোতার দলে। আমি মো মাহফুজ আহমেদ, আমি পেশায় চাকুরীজিবী ও বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র। রাসেল ভাই ভাল লাগলে এ ঘটনাটি পরে সবাইকে শুনাবেন

আমার
বাসা রংপুরের কুড়িগ্রামের জেলার ঊলিপুর থানার দুর্গাপূর ইঊনিয়ন নিভ্রিত এক গ্রাম এর আমার গ্রামের নাম জান জায়গির। 
 ঘটনাটা  ঘটে 2004 সালে আমার ছোট ভাইয়ের বয়স তখন এক বছর আমি তখন ক্লাস ফোর  এ পড়ি আমার ভালোভাবে মনে আছে। বাবা একদিন বাজার থেকে ছোট মাছ কিনে নিয়ে আসে  যদিও আমাদের পুকুর ছিল এবং সেখানে অনেক বড় মাছ ছিল কিন্তু  ছোট মাছ ছিলো না তাই বাবা চাইছিল যে ছোট মাছ দিয়ে ভাত খাওয়ার জন্য আমরা অবশ্য ছোট মাছ পছন্দ করতাম, যেই কথা সেই কাজ বাবা মাছ নিয়ে আসলেন রাত্রে, তারপর বাবা আবার বাজার চলে যায় দরকারি এক কাজে, মা মাছ রান্না করলে আমরা সবাই একসাথে খেলাম,  এখানে বলে রাখি আমার ছোট ভাই ছোট মাছ পছন্দ করত না তাই মা নিজ হাত দিয়ে তাকে খাওয়াইতেছিল এবং আমি খাওয়ার পর আমার পড়ার টেবিলে পড়তে বসলাম ভাইয়া তার রুমে শুতে গেছে এবং আমার বড় আব্বু ও দাদিমা এক সাথে ঘরে বসে পান খাচ্ছে। বাবা তখনও বাজার থেকে বাসায় আসেনি, তখন রাত ৮ বা ৯ হবে।
মা তখন ছোট ভাইকে ভাত খাওয়াতে ছিল হঠাৎ ছোট ভাইয়ের গলায়  ছোট মাছের কাঁটা ফুটে সে কান্না করতে ছিল আমিও কান্না শুনছিলাম কিন্তু সেদিকে কর্ণপাত না করে আমার পড়াশোনা আমি মনোযোগ দিলাম, সে এক সময় আরো বেশি করে কাঁদতে লাগল এক পর্যায়ে আমার বড়  আব্বু মার সাথে রাগ করে বললো ওকে আমার কাছে নিয়ে আসেন, বড় আব্বু ও দাদী মা তাদের রুমে বসে পান খাচ্ছিল, মা আমার ছোট ভাইকে নিয়ে  দাদিমার রুম যাচ্ছিল কিন্তু হঠাৎ মা দেখল আমার ছোট ভাইরের কান্না থেমে গেল, মা মনে করেছিল হয়ত কাঁটা বেরিয়ে আসছে তাই কান্নার আওয়াজ থেমেছে, তাই মা পিছনে আর তাকায়নি, মা এক সময় দাদিমার রুম এ জায়,  দাদিমা মা'কে একা দেখে বলল কোথায় আশারাফুল, মা বলল এইত আমার পিছনে, জখন মা পিছনে তাকালো দেখতে পেলো যে আমার ছোট ভাই আশরাফুল তার পিছনে নেই একটু আগেই মার পিছনে পিছনে হেটে হেটে কাঁদতে কাঁদতে আসছিল কিন্তু,
হঠাৎ কোথায় গেল আশরাফুল মা বলল দাদিমা কে, ও তো আমার পিছনেই ছিল তবে কোথায় যাবে হয়তো লুকিয়ে গেছে কোথাও মা আমাকে ডাক দিয়ে বলল , আশরাফুল কি তোর ওখানে গিয়েছে বাবা, আমি বললাম না মা আমার এখানে আসেনি তো, ও তোমার পিছনে পিছনে কাঁদতে কাঁদতে দাদীমার রুমের দিকে যাচ্ছিল আমি বললাম, সে সময় আমাদের এলাকায় কোন বিদ্যুৎ আসেনি সবার বাসায় হারিকেন জ্বালিয়ে যে যার মত কাজ কর্ম করতো,
 মা সব জায়গা খোঁজাখুঁজির পর যখন ওকে পেল না মা তখন জোরে জোরে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন আমি মার কান্না শুনে আমি রুম থেকে বের হয়ে আসলাম আমার বড় ভাই মমিনুল রুম থেকে বের হয়ে এসে কাদতেছিলাম, কান্না শুনে সবাই আমাদের বারিতে এসে ঘটনা শুনে সবাই আশরাফুল কে খুজতে লাগে,
কেউ খুঁজতে লাগলো বাঁশ বাগানে কেউ বা  আমাদের সুপারি বাগানে কেউ বা বাসায় আমরা সবাই টসলাইট, হারিকেন ,হ্যাজাক জ্বালিয়ে আশরাফুল খুঁজতে লাগলাম আশপাশের এমন কোন জায়গা ছিল না যেখানে আমরা আশরাফুলকে খুঁজিনি কিন্তু কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না,তাকে কে না পেয়ে আমরা সবাই যখন একত্র  হয়ে গেলাম, কি করা যায় এমন সময় একজন বলল যে আমরা বাসার চারদিকে হারিকেন টস লাইট জ্বালিয়ে আলোয় আলোকিত করে খুঁজছিলাম কিন্তু কোথাও পাওয়া গেল না আশরাফুলকে , হঠাৎ এক আন্টি চিৎকার করে বলে উঠলো এই তো আশরাফুল বের হয়েছে, এক সময় আমরা যেখান থেকে খুঁজে ফিরছিলাম ঠিক   ঐদিক থেকে আশরাফুল এসে দাঁড়িয়েছে সামনে ! আমরা সবাই হতভম্ব কি বলবো ওকে! এতক্ষণ কোথায় ছিল কিছুই বলতে পারলোনা, আমরা সবাই ওকে অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞাস করলাম ও কিছু উত্তর দিতে পারল না শুধু মুখের দিকে চেয়ে রইল ও শুধু বলল  মায়ের পিছনে ছিলাম তাছাড়া আমার কিছুই মনে নেই ,আমি তার গালে আবেগে  সজোরে একটা চড় মেরে বললাম কোথায় গিয়েছিলে  ভাই আমরা তোকে অনেকবার খুঁজেছি কোথাও পেলাম না তুই কোথায় গিয়েছিলি আবার এখানে কে রেখে গেলো আমরা অনেকবার এদিকে খুজাখুজি করেছি কিন্তু তোকে পাইনি, সে কোন উত্তর দিতে পারল না, এমন সময় বাসায় হুজুর আসলো হুজুরকে এর কারণ জানতে চাইলে হুজুর বলল যে এই বাসায় দুষ্টু জিনের আছর পড়েছে সে এসব ঘটনা ঘটিয়েছে সে শিশুটিকে নিয়ে যেতে চাইছিল কিন্তু পারছিল না তাই এই মাসে অজুহাতে সেটাকে নিয়ে যেতে চাইছিল হুজুর আরো বললো কিছুদিন আগে এই বাসায় একটি শিশু কন্যা মারা গিয়েছিল জন্মের পর , কিছু দুষ্ট জ্বীন বাচ্চাটিকে মেরে ফেলেছিল তারপর হুজুর আমাদের বাসা চারদিক থেকে বন্দ করে দেয় এবং আমার মাকে বলে তিনি যেন রাতে সন্ধ্যায় একা একাই যেন কোথাও না যায় ,
বাসা বন্ধ করার অনেকদিন হয়ে গেলেও তেমন কিছু ঘটেনি কিন্তু আমরা যখন নতুন করে আবার বাসা তৈরি করি সেখানে মা অনেক কিছু দেখতে পেত, যেমন সন্ধ্যায় বাসার সামনে কে যেন শিরশির করে যাচ্ছে ,আবার  অনেক সময় হঠাৎ আমাদের বাসায় টিনের ছাদে শব্দ হতো কিন্তু দেখলে কিছুই পাওয়া যেত না আরো অনেক কিছু দেখত মা , যেমন আমি কলেজে থাকতাম কিন্তু মা দেখত আমি বাসায় আছি এখন নতুন বাসায় আগের মত তেমন কিছু ঘটে না আমরা সবাই ভালো আছি l রাসেল ভাই, ঘটনাটি বিশ্বাস অবিশ্বাস সেটা সবার উপর, কিন্তু যার সাথে ঘটে আর যে পরিবার সাথে ঘটে শুধু তারাই জানে ঘটনা ঠিক কি ঘটেছে কিভাবে ঘটেছিল , প্রায় 14 বছর পর আজকে আপনাকে লিখে পাঠালাম , সবাই আমার ছোট ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন সে এখন কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও ইলেকট্রনিক্স ডিপার্টমেন্ট এর অধ্যয়নরত , সবাইকে আমার সালাম ,আশা করি আল্লাহতালা আপনাদের সবার মঙ্গল করবে , ভুত এফএম দীর্ঘজীবী হোক এটাই আমার ও সবার কামনা

No comments:

Post a Comment

সূর্য ডোবার খেলা

 সূর্য   ডোবার খেলা  এস_আর_শহীদ সাগর আকাশ মিলেছে যেখানে  রং ধনু সাত রং খুঁজে পাই সেখানে।।  সূর্য ডোবার খেলা দেখি দু'নয়নে কি দারুণ সুখে ন...