শুধুই গল্প-
সৈকত
-রহস্যের বর যাত্রী ও গোয়ন্দা কাহিনী"
ফুল আর বিভিন্ন রঙ্গিন কাপড় দিয়ে বিয়ের সাঁজে সাঁজানো একটি মাইক্রোবাস শহরের রাস্তা দিয়ে ধীর গতিতে যাচ্ছে। পিছনে আর কোন গাড়ির বহর নেই। কিন্তু এই একটি গাড়িতেই চোখ আটকে যাচ্ছে পথচারীদের। কেন না এমন ভাবে গাড়িটিকে সাঁজানো হয়েছে যে, যে কারো চোখ পড়লেই গাড়িটির দিকে না তাকিয়ে উপায় নেই। এবং যে কারো দৃষ্টি গাড়িটির উপর পড়লেই একবাক্যেই বলে দিতে পারবে এটা বর যাত্রীর গাড়ি।
গভীর আগ্রহ ভরেই পথচারীরা এই সাঁজানো গাড়িটির ভিতরে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে থাকলেন।
ভিতরে সেরোয়ানী আর বিয়ের মুকুট পড়া মধ্য বয়সী এক পাত্র বসে আছে। ডান হাতে একটি রুমাল নিয়ে মাঝে মধ্যেই মুখ ঢেকে লজ্জা লুকাচ্ছে আবার রুমালটি সরিয়ে নিচ্ছে বর। সাথে কোর্ট- টাই পড়া আরো দুইজন বর যাত্রী। আর গাড়ির ড্রাইভারের গায়ে সাদা পান্জাবী আর জালের মতো সাদা টুপি। মাইক্রোবাস অর্থাৎ গাড়িটির গ্লাসগুলো এমন ভাবে লাগানো যে বাইরে থেকে যে কেউ দৃষ্টি রাখলেই ভিতরের সব কিছুই পরিষ্কার দেখা যায়।
বরের এই গাড়িটি সারাদিন শহর বা গ্রামের রাস্তা ধরে চললেও কোন সমস্যা ছিল না। হাজার হাজার সাধারণ পথচারী গাড়ির ভিতরের বরসহ বাকী বর যাত্রীদের দেখলেও সমস্যা ছিল না।
কিন্তু সমস্যা ঘটলো যখন এই গাড়িটা একজন সাংবাদিকের চোখে পড়লো। সাংবাদিক বরের এই সাঁজানো বিয়ের গাড়িটা দেখে সন্দেহে পড়ে গেলেন। কেন না সে অন্য একটি রাস্তায়ও এই বিয়ের গাড়িটা দেখেছিল। একই বর একই বর যাত্রী এমনকি গাড়ির ড্রাইভারও বদল হয়নি।
সাংবাদিকের সন্দেহটা আরো পাকাপোক্ত হতে থাকলো এজন্যই যে, যতক্ষন আগে সে এই বিয়ের গাড়িটা রাস্তায় দেখেছে ততক্ষনে অবশ্যই কনের বাড়িতে পৌছে যাওয়ার কথা। কিন্তু একই ভাবে শহরের অন্যান্য রাস্তা ধরেই ঘুরে বেড়াচ্ছে গাড়িটি। তাছাড়া এই গাড়ির পিছনে আর কোন গাড়ির বহর নেই। বরসহ বর যাত্রীদেরও এর আগে কখনও শহরে দেখেছে বলে মনে হয়নি সাংবাদিকের।
সাংবাদিক তখন তার মোটর সাইকেলটা টেনে গিয়ে সেই বিয়ের গাড়িটা থামালেন এবং মোবাইল ফোনে গাড়িসহ বর এবং বর যাত্রীদের একটি ছবি উঠালেন। গাড়িতে বসে থাকা বরসহ বর যাত্রীদের নিকট এভাবে বিয়ের সাঁজে ঘুরে বেড়ানোর মানেটা জানতে চাইলেন। কিন্তু ড্রাইভার সাংবাদিককে জানিয়ে দিলেন যে এটা বরের গাড়ি এবং এভাবে যদি আমরা সারাদিন ঘুরে বেড়াই তাতে আপনার সমস্যা কি? সাংবাদিক আর কোন প্রশ্ন করলেন না। এ সময় গাড়িতে বসে থাকা বর হাতে রাখা রুমাল দিয়ে সুন্দর করে মুখটা ঢেকে রেখেছে।
এরপর বরের গাড়িটা আবারো চলতে শুরু করলো। সাংবাদিক সেখানে কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে গাড়িটার চলে যাওয়ার দৃশ্য দেখে তার অফিসে ফিরে আসলেন। একটা সিগারেটে আগুন ধরিয়ে গাড়িটা বিষয়াদি নিয়ে কিছুক্ষন ভাবলেন এবং "রহস্য জনক বিয়ের গাড়ি" মিরোনামে একটি নিউজ লিখে ফেললেন। যার সারমর্ম হলো এই যে এটা আসলে বিয়ের গাড়ি নয়। কোন প্রতারক চক্র এভাবে বিয়ের সাঁজে বরের সাঁজে গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেন না এই বরের গাড়ি কোন কনের বাড়িতেই যাচ্ছে না অথবা রাতের আধারে বিয়ের নামে এই বর যাত্রীরা কোন কন্যাদায়গ্রস্থ পিতার বা তার কন্যার প্রতারনাও করে বেড়াতে পারে।
পরের দিন নিউজটি ছবিসহ বক্স করে পত্রিকায় ছাপানো হলো। যাতে করে সহজেই নিউজটি মানুষের চোখে পড়ে।
নিউজটি পড়ার পর গোযেন্দা বিভাগের কর্মকর্তাসহ পুলিশের টনক নড়ে গেলো। তারা হন্যে হয়ে পুরো শহর জুড়ে গাড়িটির সন্ধান করতে থাকলো কিন্তু শহরের কোথাও সেই গাড়ির দেখা মিললো না। তখন পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন দেশের সকল থানায় রহস্য জনক বিয়ের গাড়িটার ব্যাপারে এলাউন্স করে দিলো। সাথে পত্রিকায় ছাপানো বর যাত্রীসহ গাড়িটির ছবিও পাঠালো।
দেশের সকল থানার পুলিশ এবং গোয়েন্দা বাহিনী রহস্য জনক বরের গাড়িটি ব্যাপারে অনুসন্ধার শুরু করলো। অনেক সাধারণ পথচারীও নিউজটা পড়ে গাড়িটি তার শহরে দেখার কথা স্মরন করতে থাকলেন এবং ভাবতে থাকলেন যে কত ভাবেই আজকাল মানুষ প্রতারনা করে বেড়াচ্ছে। কিন্তু দেশব্যাপী গোয়েন্দা বাহিনী আর পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে রহস্য জনক বরের গাড়িটিকে খুঁজে পেতে খুব বেশি সময় লাগলো না। পার্শ্ববর্তী এক জেলায় একটি হোটেলের পার্কিং লটে গাড়িটি পার্ক করানো অবস্থায় গাড়িটিকে উদ্ধার করলো। সাথে হোটেলের দুইটি রুম থেকে বর, বর যাত্রী এবং গাড়ির ড্রাইভারকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসলেন।
থানায় ওসির রুমে ওসির চেয়ারে বসে পুলিশের এক বড় কর্মকর্তা বরসহ বর যাত্রী এবং ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা বাদ শুরু করলেন। সাথে গোয়েন্দা বিভাগের লোকজনও। সত্য কথা না বললে রিমান্ডেরও ভয় দেখাতে থাকলেন তারা। তখন বড় যাত্রীর একজন বলতে শুরু করলেন যে অামরা সত্যি সত্যি কোন অসৎ উদ্দিশ্যে এভাবে বিয়ের সাঁজে গাড়ি সাঁজিয়ে গুরে বেড়াচ্ছি না। আমাদের কারো সাথে কোন প্রতারনা করারও উদ্দিশ্য নেই।
বর হলো একজন শিল্পপতি বাবার একজন সন্তান। আমরা তাদের আপনজন না হলেও বেতন ভুক্ত কর্মচারী। বরের বাবা আমাদেরকে অফিসের কাজ বাদ দিয়ে আপাতত এই বরের সাথে ঘুরে বেড়ানো চাকরী দিয়েছেন।
তখন পুলিশের বড় কর্মকর্তা জিজ্ঞাসা করলেন তাহলে এভাবে বিয়ের গাড়ি সাঁজিয়ে বর সেঁজে ঘুরে বেড়ানোর কারনটা কি?
তখন বর যাত্রীর একজন বলা শুরু করলেন- স্যারের স্ত্রী কিছু দিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়। স্যার ওনার স্ত্রীর সাথে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন এবং স্ত্রীকে খুব ভালোবাসতেন। স্যারের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর আর বিয়ে করতে চাচ্ছিলেন না। কিন্তু স্যারের বাবা অর্থাৎ আমাদের বড় স্যার ওনাকে বিয়ে দেয়ার জন্য সব আয়োজন করে ফেলেছিলেন। এই স্যারকে সেরোয়ানী, বিয়ের মুকুট পড়িয়ে বিয়ের সাঁজে সাঁজানো গাড়িতেও উঠানো হয়েছিল। কিন্তু সে সময় হঠাৎ করেই স্যার অসুস্থ হয়ে পড়ে যান। পরে স্যারকে হাসপাতালে নিয়ে সুস্থ করে তোলা হলেও বাকশক্তি, সাথে কিছুটা স্মৃতিশক্তিও হারিয়ে ফেলেন।
এরপর থেকে স্যারের ইচ্ছায় বড় স্যার অর্থাৎ স্যারের বাবা এই গাড়িটা বিয়ের সাঁজে সাঁজিয়ে আমাদেরকেও সাথে দিয়েছেন যেন তার ছেলে সারাদেশে বিয়ের সাঁজে ঘুরে বেড়াতে পারেন। যদি এতে করে তার বাকশক্তি বা স্মৃতিশক্তি ফিরে আসে। এছাড়া আমাদের আর কোন উদ্দিশ্য নেই।
কিন্তু পুলিশ আর গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা বর যাত্রীর এসব কথা তাদের সাঁজানো গল্প বলে সত্যটাও মানতে চাইলেন না।
সৈকত
-রহস্যের বর যাত্রী ও গোয়ন্দা কাহিনী"
ফুল আর বিভিন্ন রঙ্গিন কাপড় দিয়ে বিয়ের সাঁজে সাঁজানো একটি মাইক্রোবাস শহরের রাস্তা দিয়ে ধীর গতিতে যাচ্ছে। পিছনে আর কোন গাড়ির বহর নেই। কিন্তু এই একটি গাড়িতেই চোখ আটকে যাচ্ছে পথচারীদের। কেন না এমন ভাবে গাড়িটিকে সাঁজানো হয়েছে যে, যে কারো চোখ পড়লেই গাড়িটির দিকে না তাকিয়ে উপায় নেই। এবং যে কারো দৃষ্টি গাড়িটির উপর পড়লেই একবাক্যেই বলে দিতে পারবে এটা বর যাত্রীর গাড়ি।
গভীর আগ্রহ ভরেই পথচারীরা এই সাঁজানো গাড়িটির ভিতরে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে থাকলেন।
ভিতরে সেরোয়ানী আর বিয়ের মুকুট পড়া মধ্য বয়সী এক পাত্র বসে আছে। ডান হাতে একটি রুমাল নিয়ে মাঝে মধ্যেই মুখ ঢেকে লজ্জা লুকাচ্ছে আবার রুমালটি সরিয়ে নিচ্ছে বর। সাথে কোর্ট- টাই পড়া আরো দুইজন বর যাত্রী। আর গাড়ির ড্রাইভারের গায়ে সাদা পান্জাবী আর জালের মতো সাদা টুপি। মাইক্রোবাস অর্থাৎ গাড়িটির গ্লাসগুলো এমন ভাবে লাগানো যে বাইরে থেকে যে কেউ দৃষ্টি রাখলেই ভিতরের সব কিছুই পরিষ্কার দেখা যায়।
বরের এই গাড়িটি সারাদিন শহর বা গ্রামের রাস্তা ধরে চললেও কোন সমস্যা ছিল না। হাজার হাজার সাধারণ পথচারী গাড়ির ভিতরের বরসহ বাকী বর যাত্রীদের দেখলেও সমস্যা ছিল না।
কিন্তু সমস্যা ঘটলো যখন এই গাড়িটা একজন সাংবাদিকের চোখে পড়লো। সাংবাদিক বরের এই সাঁজানো বিয়ের গাড়িটা দেখে সন্দেহে পড়ে গেলেন। কেন না সে অন্য একটি রাস্তায়ও এই বিয়ের গাড়িটা দেখেছিল। একই বর একই বর যাত্রী এমনকি গাড়ির ড্রাইভারও বদল হয়নি।
সাংবাদিকের সন্দেহটা আরো পাকাপোক্ত হতে থাকলো এজন্যই যে, যতক্ষন আগে সে এই বিয়ের গাড়িটা রাস্তায় দেখেছে ততক্ষনে অবশ্যই কনের বাড়িতে পৌছে যাওয়ার কথা। কিন্তু একই ভাবে শহরের অন্যান্য রাস্তা ধরেই ঘুরে বেড়াচ্ছে গাড়িটি। তাছাড়া এই গাড়ির পিছনে আর কোন গাড়ির বহর নেই। বরসহ বর যাত্রীদেরও এর আগে কখনও শহরে দেখেছে বলে মনে হয়নি সাংবাদিকের।
সাংবাদিক তখন তার মোটর সাইকেলটা টেনে গিয়ে সেই বিয়ের গাড়িটা থামালেন এবং মোবাইল ফোনে গাড়িসহ বর এবং বর যাত্রীদের একটি ছবি উঠালেন। গাড়িতে বসে থাকা বরসহ বর যাত্রীদের নিকট এভাবে বিয়ের সাঁজে ঘুরে বেড়ানোর মানেটা জানতে চাইলেন। কিন্তু ড্রাইভার সাংবাদিককে জানিয়ে দিলেন যে এটা বরের গাড়ি এবং এভাবে যদি আমরা সারাদিন ঘুরে বেড়াই তাতে আপনার সমস্যা কি? সাংবাদিক আর কোন প্রশ্ন করলেন না। এ সময় গাড়িতে বসে থাকা বর হাতে রাখা রুমাল দিয়ে সুন্দর করে মুখটা ঢেকে রেখেছে।
এরপর বরের গাড়িটা আবারো চলতে শুরু করলো। সাংবাদিক সেখানে কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে গাড়িটার চলে যাওয়ার দৃশ্য দেখে তার অফিসে ফিরে আসলেন। একটা সিগারেটে আগুন ধরিয়ে গাড়িটা বিষয়াদি নিয়ে কিছুক্ষন ভাবলেন এবং "রহস্য জনক বিয়ের গাড়ি" মিরোনামে একটি নিউজ লিখে ফেললেন। যার সারমর্ম হলো এই যে এটা আসলে বিয়ের গাড়ি নয়। কোন প্রতারক চক্র এভাবে বিয়ের সাঁজে বরের সাঁজে গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেন না এই বরের গাড়ি কোন কনের বাড়িতেই যাচ্ছে না অথবা রাতের আধারে বিয়ের নামে এই বর যাত্রীরা কোন কন্যাদায়গ্রস্থ পিতার বা তার কন্যার প্রতারনাও করে বেড়াতে পারে।
পরের দিন নিউজটি ছবিসহ বক্স করে পত্রিকায় ছাপানো হলো। যাতে করে সহজেই নিউজটি মানুষের চোখে পড়ে।
নিউজটি পড়ার পর গোযেন্দা বিভাগের কর্মকর্তাসহ পুলিশের টনক নড়ে গেলো। তারা হন্যে হয়ে পুরো শহর জুড়ে গাড়িটির সন্ধান করতে থাকলো কিন্তু শহরের কোথাও সেই গাড়ির দেখা মিললো না। তখন পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন দেশের সকল থানায় রহস্য জনক বিয়ের গাড়িটার ব্যাপারে এলাউন্স করে দিলো। সাথে পত্রিকায় ছাপানো বর যাত্রীসহ গাড়িটির ছবিও পাঠালো।
দেশের সকল থানার পুলিশ এবং গোয়েন্দা বাহিনী রহস্য জনক বরের গাড়িটি ব্যাপারে অনুসন্ধার শুরু করলো। অনেক সাধারণ পথচারীও নিউজটা পড়ে গাড়িটি তার শহরে দেখার কথা স্মরন করতে থাকলেন এবং ভাবতে থাকলেন যে কত ভাবেই আজকাল মানুষ প্রতারনা করে বেড়াচ্ছে। কিন্তু দেশব্যাপী গোয়েন্দা বাহিনী আর পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে রহস্য জনক বরের গাড়িটিকে খুঁজে পেতে খুব বেশি সময় লাগলো না। পার্শ্ববর্তী এক জেলায় একটি হোটেলের পার্কিং লটে গাড়িটি পার্ক করানো অবস্থায় গাড়িটিকে উদ্ধার করলো। সাথে হোটেলের দুইটি রুম থেকে বর, বর যাত্রী এবং গাড়ির ড্রাইভারকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসলেন।
থানায় ওসির রুমে ওসির চেয়ারে বসে পুলিশের এক বড় কর্মকর্তা বরসহ বর যাত্রী এবং ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা বাদ শুরু করলেন। সাথে গোয়েন্দা বিভাগের লোকজনও। সত্য কথা না বললে রিমান্ডেরও ভয় দেখাতে থাকলেন তারা। তখন বড় যাত্রীর একজন বলতে শুরু করলেন যে অামরা সত্যি সত্যি কোন অসৎ উদ্দিশ্যে এভাবে বিয়ের সাঁজে গাড়ি সাঁজিয়ে গুরে বেড়াচ্ছি না। আমাদের কারো সাথে কোন প্রতারনা করারও উদ্দিশ্য নেই।
বর হলো একজন শিল্পপতি বাবার একজন সন্তান। আমরা তাদের আপনজন না হলেও বেতন ভুক্ত কর্মচারী। বরের বাবা আমাদেরকে অফিসের কাজ বাদ দিয়ে আপাতত এই বরের সাথে ঘুরে বেড়ানো চাকরী দিয়েছেন।
তখন পুলিশের বড় কর্মকর্তা জিজ্ঞাসা করলেন তাহলে এভাবে বিয়ের গাড়ি সাঁজিয়ে বর সেঁজে ঘুরে বেড়ানোর কারনটা কি?
তখন বর যাত্রীর একজন বলা শুরু করলেন- স্যারের স্ত্রী কিছু দিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়। স্যার ওনার স্ত্রীর সাথে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন এবং স্ত্রীকে খুব ভালোবাসতেন। স্যারের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর আর বিয়ে করতে চাচ্ছিলেন না। কিন্তু স্যারের বাবা অর্থাৎ আমাদের বড় স্যার ওনাকে বিয়ে দেয়ার জন্য সব আয়োজন করে ফেলেছিলেন। এই স্যারকে সেরোয়ানী, বিয়ের মুকুট পড়িয়ে বিয়ের সাঁজে সাঁজানো গাড়িতেও উঠানো হয়েছিল। কিন্তু সে সময় হঠাৎ করেই স্যার অসুস্থ হয়ে পড়ে যান। পরে স্যারকে হাসপাতালে নিয়ে সুস্থ করে তোলা হলেও বাকশক্তি, সাথে কিছুটা স্মৃতিশক্তিও হারিয়ে ফেলেন।
এরপর থেকে স্যারের ইচ্ছায় বড় স্যার অর্থাৎ স্যারের বাবা এই গাড়িটা বিয়ের সাঁজে সাঁজিয়ে আমাদেরকেও সাথে দিয়েছেন যেন তার ছেলে সারাদেশে বিয়ের সাঁজে ঘুরে বেড়াতে পারেন। যদি এতে করে তার বাকশক্তি বা স্মৃতিশক্তি ফিরে আসে। এছাড়া আমাদের আর কোন উদ্দিশ্য নেই।
কিন্তু পুলিশ আর গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা বর যাত্রীর এসব কথা তাদের সাঁজানো গল্প বলে সত্যটাও মানতে চাইলেন না।
No comments:
Post a Comment